খুলনার পাইকগাছায় চাঁদার টাকা না পেয়ে মিজানুর সরদার নামে এক ঘের ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করেছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্র। এ ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী ওই চক্রের প্রধান শফি গাজীর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাটাখালী বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে শফি গাজী ও তার অনুসারীরা দখলবাজি ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষে স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দেওয়ায় শনিবার (ঈদের দিন) রাতে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। আহত মিজানুরকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে রোববার সকালে শফির এক সহযোগী আনারুলকে ধরে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। ওই সময় শফির বাড়ি ও দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শফির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সাতটি দেশীয় অস্ত্র ও বিদেশি মদের তিনটি খালি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় গৃহবধূ রুপালি বেগম বলেন, রাত হলেই শফি বাহিনী অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। অনেক পরিবার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। মোস্থফা গাজী বলেন, গত ৩০ মে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মিছিল করায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। কাঁটাখালী বাজার কমিটির সভাপতি ও বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান ময়না বলেন, শফি গাজী ও তার বাহিনীর অত্যাচারে বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। এলাকাবাসী আর সহ্য করতে না পেরে রোববার তার বাড়িতে হামলা চালায়। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) ইদ্রিসুর রহমান বলেন, পোড়ানো বাড়ি ও দোকান পরিদর্শন করেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার করা দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উপজেলার কাটাখালী বাজারসহ আশপাশের এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন শফি গাজী। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু করেন। খাল ও লিজঘের দখল, দোকানপাটে প্রকাশ্যে চাঁদা দাবি, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তার বাহিনী। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা শফি গাজীর লোকজন করেনি