আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচ দিনের পরিবর্তে ভোটের আগে ও পরে মোট আট দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভোটের মাঠে মূলত পাঁচ দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাখি। এবার আট দিন রাখার প্রস্তাব এসেছে— নির্বাচনের আগে তিন দিন, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন-পরবর্তী চার দিন। এটি আমরা পরীক্ষা করে দেখব।’
আখতার আহমেদ জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনা সদস্য মাঠে থাকবে। এছাড়া নির্বাচনে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্য এবং ৫ থেকে ৬ লাখ আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য মাঠে কাজ করবে। তবে আরপিও সংশোধনের পর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হবে।
এর আগে, আজ সকালে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এতে সভাপতিত্ব করেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগ; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ; পুলিশ সদর দপ্তর; বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি, ডিএজিএফআই, এনএসআই, এনটিএমসি, বিশেষ শাখা (এসবি) ও সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ইসি সচিব বলেন, বৈঠকে মূলত কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়— এর মধ্যে ছিল ভোটকেন্দ্র ও কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা, মাঠ পর্যায়ের বাহিনীর সমন্বয়, অবৈধ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও প্রচারণা প্রতিরোধ, বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও মনিটরিং সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাধারণ নাগরিকদের ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজনে নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে।
নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, “অবশ্যই নির্বাচন-উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান আছে। সেই পরিবেশকে আরও সুদৃঢ় করতেই আজকের আলোচনা, এবং এটি চলমান থাকবে,” বলেও উল্লেখ করেন তিনি।