রবিন চৌধুরী রাসেল, রংপুর।
রংপুর তাজহাট এলাকায় আশরতপুর কোটপাড়ায় বিনা নোটিশে বাড়িঘর উচ্ছেদের এক অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাঁচটি পরিবার গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরেজমিনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,ওই মহল্লার মৃত কেরামত প্রামাণিকের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে হবিবর ও নকিবর এবং এক মেয়ে ছইমন নেছা উত্তরাধিকারসূত্রে মোট ১১৮.৫ শতাংশ জমির মালিক হন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ছইমন নেছার ওয়ারিশগণ তাঁদের অংশের ২১ শতাংশ জমি বৈধভাবে বিক্রি করেন। ক্রেতারা নিয়মিত দলিল, খাজনা ও খারিজ সম্পন্ন করে ঐ জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে তিনজন সরকারি চাকুরিজীবী। তারা হলেন আফসানা মিমি, আনোয়ারা বেগম ও মুক্তি বেগম, এবং দুইজন সাধারণ কর্মজীবী ফুলবাবু ও আনোয়ার হোসেনের ওয়ারিশগণ। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত তফসিলভুক্ত জমি পুনর্দখলের উদ্দেশ্যে স্থানীয় এক ব্যক্তি নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ১২টার মধ্যে পরিচিত ও অপরিচিত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি মব তৈরি করে কোনো সরকারি নোটিশ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই সেখানে উচ্ছেদের নামে ভয়াবহ তান্ডব চালায়। ভুক্তভোগীদের দাবি, উচ্ছেদের সময় তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়, এবং ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র, টাকা পয়সা, সোনা গহনা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়। ফলে পাঁচটি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে এবং বর্তমানে তারা আশ্রয়হীন অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার ভুক্তভোগী শিক্ষক মিজানুর সরদার রিপন, সাংবাদিকদের বলেন, আমরা উচ্ছেদের আগে নোটিশ পেলে আমাদের ঘরের বিভিন্ন মালামাল সহ মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার করতে পারতাম। কিন্তু তারা নোটিশ ছাড়াই আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ায় আমরা ঘরের কোন কিছু উদ্ধার করতে পারিনি। এ বিষয়ে আমি রংপুর বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি। আদালতে মামলা পরিচালনাকারী এডভোকেট রফিকুল ইসলাম জানান, একটি কুচক্রি মহল মব সৃষ্টি করে বিনা নোটিশে ভুক্তভোগীদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। ভুক্তভোগীরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ন্যায়বিচার পাওয়া তাদের অধিকার রয়েছে। আমি তাদেরকে ন্যায়বিচার পেতে সহায়তা করব।