শুক্রবার দিবাগত রাতে এক ছাত্রীকে হেনস্থার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মুমিন রবিবার(৩১ আগস্ট) বিকালে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের পূর্ব পাশ থেকে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পূর্ব পাশে রেলগেট পর্যন্ত রবিবার দুপুর ২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং জনসাধারণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসন এই জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে সকল ধরণের আন্দোলন, জমায়েত, সমাবেশ, বিক্ষোভ এবং সকল ধরণের অস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষে উপাচার্য ও প্রক্টরসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
সংঘর্ষে অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, উপ উপাচার্য এবং প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ আহত হন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর আবাসিক এলাকার ২ নম্বর গেটে স্থানীয় একদল লোক কোনো উসকানি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং ৫০ জন আহত হন। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেছেন, সকালে ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখা গেলেও তারা একটি সংক্ষিপ্ত অভিযান চালিয়ে চলে যান। তাদের চলে যাওয়ার পরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে, সংঘর্ষের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের চলমান সকল পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
উপ উপাচার্য কামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়দের হামলায় আহত অনেক শিক্ষার্থীর আজ নির্ধারিত পরীক্ষা ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।’
এর আগে, শনিবার দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মধ্যরাতের কিছু আগে গেট খোলার বিষয়টি নিয়ে তার ভাড়া বাড়ির একজন প্রহরী এবং তার মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে, প্রহরী মেয়েটিকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে।
অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদে জড়ো হয়ে প্রহরীকে আটক করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে স্থানীয়দের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে, স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে বাসিন্দাদের জড়ো হয়ে আক্রমণ করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যদিকে চবি সোহরাওয়ার্দী হল মসজিদ থেকে ঘোষণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়, যার ফলে ভয়াবহ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং ৫০ জন আহত হয়।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেছেন যে, সংঘর্ষের সময় স্থানীয় লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কিছু শিক্ষার্থীর উপর হামলা চালিয়েছে।
আহতদের মধ্যে ২০ থেকে ২১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিএমসিএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।