রবিন চৌধুরী রাসেল, রংপুর।
রংপুর জেলা মিঠাপুকুর উপজেলায় সরকারি ভাতা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দুই সমাজকর্মী মোর্শেদূজ্জামান (৩৯) মিঠাপুকুর সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে উপজেলার মির্জাপুর ও ইমাদপুর ইউনিয়ন সমাজকর্মীর দায়িত্বে রয়েছেন। অপর অভিযুক্ত তৌহিজুল ইসলাম (৩৭) বড় হযরতপুর ইউনিয়ন সমাজকর্মীর দায়িত্বে রয়েছেন।
ধর্ষনের অভিযোগকারী রিক্তা বেগম (৪২) মিঠাপুকুর উপজেলার ১৬ নং মির্জাপুর ইউপির সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) অভিযুক্ত দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের বিষয় উল্লেখ করে রংপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী নারী ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা কর্তৃক বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কাজে প্রায়সময় অভিযুক্তদের সাথে ভুক্তভোগী নারীর কথা হয়। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘটনার দিন গত ১৪ আগস্ট বিকেলে বয়স্ক ভাতার বই দেওয়ার কথা জানিয়ে ইউপি সদস্য রিক্তাকে জরুরীভাবে রংপুর শহরে ডাকেন অভিযুক্ত তৌহিজুল। সেখান থেকে রিক্তা বেগমকে রংপুর নগরীর বিনোদপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ভাড়া বাসায় স্ত্রীসহ বসবাস করেন আরেক অভিযুক্ত সমাজকর্মী মোর্শেদুজ্জামান। ঘটনার দিন মোর্শেদুজ্জামানের স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেদিন চা চক্রের একপর্যায়ে মোর্শেদুজ্জামানের লালসার শিকার হন ওই নারী ইউপি সদস্য। এতে সহযোগিতা করেন সমাজকর্মী তৌহিজুল।
ভুক্তভোগী নারী ইউপি সদস্য রিক্তা বেগম বলেন, আমাকে. ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া জনগণের ভাতা করে দেওয়ার কথা জানান। আমি কয়েকজনের কাগজপত্র দিলে, সেদিন ভাতার বই দেওয়ার কথা বলে শহরে ডাকলে আমি সেখানে যাই। ঘটনার দিন তার ভাড়া বাসা ফাকা ছিল। সে সেই সুযোগে আমার সর্বনাশ করেছে। একজন সমাজকর্মীর মানসিকতা ধর্ষণের মতো জনঘ্যতম হয় কিভাবে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোর্শেদুজ্জামান ও তৌহিজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি ২৪ আগস্ট মিঠাপুকুর সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে তাদের দেখা মেলেনি। মোবাইল ফোনে কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
মিঠাপুকুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ মুঠোফোনে জানান, দুজনের কেউ আজকে অফিসে আসেননি। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেব। বিষয়টি আমাকে এখনো কেউ লিখিতভাবে জানায়নি। তবে কেউ উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট কোন অভিযোগ দিয়েছেন কিনা আমার জানা নেই।
রংপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, মিঠাপুকুরের এক নারী এ বিষয়ে একটি এজাহার দিয়েছেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।