নীতিমালা ভঙ্গ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র রাজনীতি করা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রতিবাদে প্রশাসনকে শাড়ি ও চুড়ি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপর বেরোবির পরিচালক অধ্যাপক ইলিয়াস প্রামাণিক ও প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানের অনুপস্থিতিতে তাদের চেয়ারে শাড়ি মুড়িয়ে এবং টেবিলে চুড়ি রেখে দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বেরোবির শিক্ষার্থী সামসুর রহমান সুমন ও আশিকুর রহমান আশিক। বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান, রোবায়েদ হাসান, রুম্মানুল ইসলাম রাজসহ অন্যরা।
‘লেজুড়বৃত্তিক’ ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই নোংরা ছাত্র রাজনীতির কারণে আমরা আবু সাঈদকে হারিয়েছি। নোংরা রাজনীতির কারণে এ ক্যাম্পাসে আর কোনো শিক্ষার্থীকে আমরা হারাতে চাই না। আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে আর কোনো রাজনীতির স্থান হবে না। প্রশাসন তাদের প্রশ্রয় দেয় বলেই তারা এ ধরনের কার্যক্রম করার সাহস পাচ্ছে।
বেরোবি প্রশাসনকে উদ্দেশ করে তারা বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। যারা শিক্ষার্থীদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করতে পারবেন, তাদেরকেই আমরা প্রশাসনিক দায়িত্বে চাই। আমরা কোনোভাবেই আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকতে দেব না। এ সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির কিছু বিচ্ছিন্ন প্রমাণ আমরা পেয়েছি, যা নিয়ে আমরা কাজও শুরু করে দিয়েছি। তার মধ্যেই আমরা জানতে পারি, শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের লক্ষ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিকেল পাঁচটায় আলোচনার জন্য ডেকেছিলাম। কিন্তু তারা বিকেল সাড়ে চারটায় তাদের এ কর্মসূচি পালন করেছেন।’
এদিকে বেরোবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরই মধ্যে শাড়ি-চুড়ি পড়ানো কর্মসূচির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত ও চলতি বছরের ১৫ এপ্রিলের অফিস আদেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১১১তম সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হয়।