মোঃ আশিকুর রহমান, রংপুর।
রংপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইজনকে কুপিয়ে জখম করার পরেও ক্ষোভ মেটেনি সন্ত্রাসীদের। তাদের ভয়ে বাড়ি ছাড়া ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবার। এ ঘটনায় হাজিরহাট মেট্রোপলিটন থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের হলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে নেয়া হয়নি জোড়ালো কোন পদক্ষেপ। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের বখতিয়ারপুর কেরানিহাট এলাকায়।এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে গত ৬ জুন শুক্রবার সকালে বখতিয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা মাহাবুবার রহমান এর ছেলে হযরত আলী বাইসাইকেল নিয়ে তার অসুস্থ খালাকে দেখতে পাশের গ্রাম বিন্নাটারী এলাকায় গেলে ওই এলাকার বাসিন্দা রজব আলীর ছেলে এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী আরেফিন,জালাল মিয়ার দুই ছেলে শহিদুল ও মজমুলসহ রজব আলীসহ ভুক্তভোগী হযরত আলীর পথরোধ করে বাইসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে হযরত বাধা দিলেই প্রথমে আরেফিন চাপাতি দিয়ে ঘাড়ে কোপ মারে এবং অন্যান্য আসামিরাও একই কায়দায় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে হযরত আলীকে কোপাতে থাকে। নৃশংস সন্ত্রাসী তান্ডব দেখে স্থানীয়রা সংঘবদ্ধ হয়ে ধাওয়া করলে তারা সটকে পড়ে। গুরুতর আহত হযরত আলীকে স্থানীয়রা প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানকার কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করেন। এঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী আশা মনি বাদি হাজির হাট মেট্রোপলিটন থানায় ৫ জনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেন। এজাহার বিষয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন জানতে পেরে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদির বাড়িতে এসে ভুক্তভোগীদের হুমকি দেয়। এতে লুৎফর রহমানের ছেলে রুবেল মিয়া তাদের বাধা প্রদান করলে আসামিরা তাকেও সন্ত্রাসী কায়দায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। বর্তমানে ওই রুবেল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে আহত হযরত আলীকে বাঁচাতে স্থানীয়রা এলাকার বিভিন্ন বিত্তবান মানুষদের কাছে আর্থিক সহায়তা নিয়ে চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছে। অসহায় আহত হযরত আলীর স্ত্রী আশা মনি প্রতিবেদককে বলেন, একদিকে মৃত্যু শয্যায় আহত স্বামীর ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচ অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সন্ত্রাসীদের ভয়ে দুই দুইটি নাবালক সন্তানকে নিয়ে আত্মীয় স্বজনের বাসায় আত্মগোপনে থাকছি। ঘটনার ৩দিন অতিবাহিত হয়েগেছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন একজন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এবিষয়ে তিনি পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তবে এসংক্রান্ত ব্যাপারে আহত রুবেল এর বাবা লুৎফর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, উল্লেখিত আসামিরা এই এলাকার ত্রাস, এর আগেও তারা এক মহিলাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরা আধিপত্য বিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ওই এলাকার স্থানীয়রা ক্ষোভ নিয়ে প্রতিবেদককে বলেন,এই সন্ত্রাসীরা এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যা হিংস্র জানোয়ারের মতো। এদেরকে পুলিশ প্রশাসন যদি দ্রুত গ্রেফতার না করে তাহলে এর চেয়েও বড়ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এবিষয়ে হাজির হাট মেট্রোপলিটন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন শাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।